জাবি প্রতিনিধি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে হত্যা, গণগ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের মুক্তিসহ ৯ দফা দাবিতে আবারও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া চত্বরে সমবেত হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলে।
এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিল থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের “এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়”, “দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ”, “আমার ভাই মরলো কেনো, শেখ হাসিনা জবাব চাই” প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ১৯ দিন ধরে অন্যায্যভাবে হল বন্ধ করে রেখেছে । আমরা ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম প্রশাসনকে দিয়েছি। যদি হল খুলে দেওয়া না হয় পরবর্তী ব্যবস্থা আর প্রশাসনের হাতে থাকবে না। শিক্ষার্থীরা ভিসি, প্রক্টর, প্রভোস্টদের পরিত্যাগ করবে। তারা নিজেরা নিজ দায়িত্বে হলে উঠে যাবে।
অবরোধ চলাকালে গণমাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, এই আন্দোলনের জাবি শাখার প্রধান সমন্বয়ক আরিফ সোহেলসহ আমাদের যেসকল সমন্বয়কবৃন্দ এবং শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা কারাগারে বন্দী আছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। আজকের মধ্যে আমাদের নয় দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। নইলে আগামীকাল থেকে সারা বাংলাদেশে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে। সরকারকে আমরা কোনোভাবেই আর সহযোগিতা করবো না। আর এ আন্দোলন যদি পরবর্তীতে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের দিকে যায় তখন কিন্তু আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবাসিক হল সমূহ খুলে দেয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে জিতু আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। আমরা যাতে দ্রুত হলে ফিরতে পারি সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবাসিক হল সমূহ খুলে দেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিচ্ছি। অন্যথায় কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, প্রশাসন সহযোগিতা না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে উঠার জন্য তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এর আগে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া মঞ্চের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।