আনোয়ার হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ সান্তাহার-দিনাজপুর-পঞ্চগড় রুটে চলাচলকারী সেভেন আপ ও এইট ডাউন মেইল ট্রেন ২টি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় যাত্রী সাধারনের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালীন সময় ট্রেন ২ টি বন্ধ রাখেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ রুটে আন্তনগর ও মেইলট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেনগুলো চলাচল শুরু করে। অন্যান্যে সকল ট্রেন চালু করা হলেও বিগত প্রায় ৪ বছরেও বন্ধ ওই ট্রেন ২টি আর চালু করা হয়নি।
ভূক্তভোগী যাত্রী সাধারন জানান, রংপুর পার্বতীপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় যাওয়ার জন্য যাত্রীদের এই ট্রেন ২ টি একমাত্র ভরসা।
অথচ গুরুত্বপূর্ন ট্রেন ২ টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখায় যাত্রীদেক ফেলছে চরম দূর্ভোগে। এমতবস্থায় অনেকেই নিরূপায় হয়ে প্রয়োজনের তাগিদে বিভাগীয় শহর রংপুর ও শিক্ষাবোর্ড দিনাজপুরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় নানা হয়রানীর শিকার হয়ে বাসে যাতায়াত করছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা রেল স্টেশনে রংপুর, পার্বতীপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান যাত্রী মিন্টু মিয়া, আঃ ছাত্তার, আমিনুল ইসলাম, মোকলেছুর রহমান ও সাদা মিয়া সহ ভুক্তভোগি অনেকেই বলেন, স্টেশনে সেভেন আপ ট্রেনে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তুু স্টেশনে আসার কিছুক্ষন পর জানতে পারি ট্রেনটি এখনো চালু করা হয়নি। এখন বাধ্য হয়ে আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসে গন্তব্যস্থানে যেতে হবে। এছাড়া ট্রেন ২টি চালু না থাকায় অনেক ব্যবসায়ীদের মালামাল বহনে অনেকটা বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তারা বলছেন, ট্রেনে মালামাল সহসায় আনা নেয়া এবং অনেক কম ভাড়ায় বহন করা যেতো। বর্তমানে ট্রেন ২টি না থাকায় সড়ক পথে নানা ভাবে হয়রনারী হয়ে অনেক কষ্টে অতিরিক্ত ভাড়ায় মালামাল নিয়ে আসতে হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসায় অনেকটা আর্থিক ক্ষতিসাধন হচ্ছে।
নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শাহরিয়ার ইসলাম রাসেল বলেন, গুরুত্বপুর্ন ট্রেন ২ টি বন্ধ থাকায় এ এলাকার মানুষজন বিভাগীয় শহর রংপুর ও শিক্ষাবোর্ড দিনাজপুরে যাতায়াতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তিনি অনতিবিলম্বে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে ট্রেন ২ টি চলাচলের জন্য জোর দাবি জানান।
নলডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন সরকার ও যুবলীগ নেতা শরীফ জানান, ট্রেন হচ্ছে যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও স্বস্তিকর যাত্রাপথ। এজন্য মানুষজন ট্রেনে যাতায়াত করতে অনেকটা স্বাচ্ছ্যেন্দবোধ করেন। আর বাসে চলাচল করা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ন ভেবে কেউ কেউ বাসে যেতে চান না। ট্রেন ২ টি বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্টিকে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। তাই ট্রেন ২টি দ্রুত চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমানিরহাট ডিভিশনের ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ট্রেন ২টির নাম এখন পর্যন্ত টাইমটেবলে রয়েছে। কিন্তু লোকবল এবং ইঞ্জিন সংকটের কারণে এই মুহুর্তে ট্রেন ২টি চালু করার সম্ভবনা নেই। তবে এট্রেন ২টির পরিবর্তে দোলনচাপা এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। কখনো সুযোগ সুবিধা হলে ট্রেন ২টি চালু করা হবে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের দাবি, দোলনচাপা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করা হলেও সব স্টেশনে এট্রেনটির যাত্রা বিরতি নেই।