আনোয়ার হোসেন, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
শুচিতার মুর্ত প্রতীক শুভপ্রাণ শিশুরাই ধরার বুকে নিয়ে আসে নন্দনের সংবাদ। হুলুধ্বনি শঙ্খধ্বনিতে হয় নবজাতকের বরণ। শিশুরাই আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন। অনাগত দিনের নতুন ইতিহাস। এদের মধ্যেই সুপ্ত আছে ভাবীকালের কত কবি শিল্পী সাহিত্যিক, কত সত্যসন্ধ বিজ্ঞানী, কত দুঃসাহসী অভিযাত্রী, কত আলোকতীর্থের অভিসারী যুগাবতার ধর্মগুরু, ইতিহাসের কত খ্যাত-কীর্তি পুরুষ। আজ মর্ত্যের প্রাঙ্গণে যার অপটুু, ভীরু-চরণধ্বনি, উত্তরকালে তারই দৃপ্ত পদচারণা।
যে শিশুরা ভবিষ্যতের উজ্জ্বল সম্ভাবনার বলিষ্ঠ অঙ্গীকার, যাদের কর্মসাধনা ও সিদ্ধির ওপর নির্ভর
করে দেশ ও জাতির গৌরব-ইতিহাস, যারা আগামী দিনের স্বপ্ন ও স্বার্থকতা, তাদের জীবনে উপেক্ষা, আর অশ্রুসিক্ত বেদনার কত করুন কাহিনী। দুঃখ-দারিদ্র্য-লাঞ্চনার কত অভিশাপ।
পরনে রং-বেরঙের স্কুল পোশাকে আবৃত বাবা-মায়ের হাত ধরে যে শিশুটি স্কুলে যাবে কিংবা বিনোদনে মেতে থাকবে ভাই বোনের সাথে,একটি শিশুর কথা আমরা এভাবেই ভাবি। আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার।
দারিদ্রের কষাঘাতে সেই শিশুটি পৃথিবীর রং,রূপ আর মায়ের কোলের ভুবন ভোলানো শান্তি পাবার আগে ছিটকে পড়ে চরম বাস্তবতায়, ক্ষুধা, দারিদ্র, আর সংসারের অনটনের দায়ভার শিশুটির কাঁধে চেপে বসে কিছু বুঝে উঠার আগেই। তাই পেটের তাড়নায় শিশুটি ছিটকে বেরিয়ে আসে তার অপরিণত জীবন থেকে,বাঁচবার প্রয়োজনে তাকে কাজের সন্ধানে বেরুতে হয়।
শনিবার (১৬ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের সিংরিয়া গ্রামে ৬/৭ বছর বয়সী এমন ২ শিশুকে নদীর সিসি ব্লক তৈরির কারখানায় কাজ করতে। শুধু সিসি ব্লক তৈরির কারখানায় নয় আমাদের চার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রমিকেরা কাজ করছে।
সচেতন মহলের বক্তব্য, যে সমস্ত শিশু আজ জীবিকার সন্ধানে জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে হাড়ভাঙ্গা শ্রম দিচ্ছে তাদের বেশির ভাগই নির্যাতিত নিপীড়িত। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এ সব শিশু অল্প বয়সে বিপদগামী হচ্ছে। তাদের দাবী, এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা হোক। যে সকল কাজ শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তা বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তার প্রয়োগ করা হোক।