নাসিরা সুলতানা, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
কার্তিক মাস পেরিয়ে অগ্রহায়ণ মাসে শীতের অনুভব হতেই বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। নতুন ধানের আগমনে ঘরে ঘরে নানা রকমের পিটা সাপটার ধুম পড়ছে। নতুন জামাই-মেয়েদের আপ্পায়নের জন্য গ্রামগঞ্জে খেজুর রসের গুড় নিয়ে শুরু হয়েছে হৈ-চৈ। বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আদমদীঘি উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাতে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছের মালিকের সাথে চুক্তি করে রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
অতীতে খেজুর গাছ রোপন না করলেও জমির আইলে , পতিত জমিতে এবং খলিয়ান সহ বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার খেজুর গাছ দেখা যেত। কিন্তু কালের বির্বতনে সেই খেজুর গাছ গুলো তেমন আর চোখে পড়ে না। খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে তেমন কোন আসবাবপত্র তৈরী হয়না; জালানী হিসাবে ব্যবহার করা যায়। বছরে একবার খেজুর গাছ রস দেয়; সেই রসের গুড়ের স্বাদ আর গন্ধে ভরে যায় মন। এ উপজেলায় গুড়ের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক কম।
উপজেলার তালসন গ্রামের খেজুর গাছি এনামুল ইসলামের সাথে মঙ্গলবার কথা হলে তিনি জানান, গত কয়েক বছর আগে যে পরিমান খেজুর গাছ ছিল বর্তমানে তার অর্ধেকও নেই। খেজুর গাছের গলা কেটে রস সংগ্রহ করতে হয়। কার্তিক মাসে শেষে অগ্রহায়ণের শুরুতে গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। খেজুরের রস আহরণ করা হয় অগ্রহায়ণ মাস থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। সেই রস থেকে পাতলি গুড়, পাটারি ও দানাদার গুড় তৈরী করে বাজারজাত করা হয়। খেজুর গাছ কম থাকায় মানুষের চাহিদা মতো গুড় উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।
গ্রামের হারানো প্রায় সেই খেুজুর রসের সাথে মিসে থাকা সংস্কৃতির অংশগুলো বেঁচে থাকুন। কঁনকঁনে শীতে চাঁদর গায়ে রস সংগ্রহে ব্যস্ত থাকুক গাছিরা। বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে শীতের সকালে ধুম পড়ে যাক রসে ভেজা পিঠা ও পায়েস। এমনটি প্রত্যাশা সকলের।