আমিনুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ :
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া মিলছে না ভূমি সেবা। হয়রানীর শিকার হচ্ছে ভুক্তোভোগীরা। অতিরিক্ত টাকা না দিলে মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে সেবা প্রত্যাশীদের এমন অভিযোগ উঠেছে ফুকুরহাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন।
জানাগেছে, সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কাছে ভূমি সেবা নিতে আসলে টাকা ছাড়া কোনধরনের সেবা মিলে না। নামজারী কিংবা ভূমি সংক্রান্ত যেকোন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন সেবা মিলছে না সাধারণ মানুষদের।
ভুক্তভোগী চর ফুকুরহাটি এলাকার মো :সমেজুদ্দিনের ছেলে সোনামিয়া বলেন, আমার জমিতে মিসকেসের ব্যাপারে (যার নং ২২৮০/ ২২-২৩ ইং) ফরিদ নায়েব আমার বাবার কাছ থেকে জমির কাগজপত্র দেখতে এক হাজার টাকা নেয় । আমাদের জমির কাগজপত্র ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছি। ব্যাংক থেকে জমির কাগজপত্র ফটোকপি করে নিয়ে গেলে নায়েব ফরিদ বলেন ‘রাখেন আপনাদের খেতাপাতনি’। আপনারা অন্যের জমি দখল করে রাখছেন। কিন্তু আমরা ওই জমি ৩০ বছর ধরে ভোগদখলে আছি। আমাদের দখলকৃত জমি সরজমিনে তদন্ত না করে জমিতে আমার দখল নাই এই প্রতিবেদন দেন ফুকুরহাটি সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন। আমার বৈধ জমির জন্য নায়েবকে ঘুষ না দেয়ায় তিনি আমাদের হয়রানী করছে।
আরেক ভুক্তভোগী জসিম বলেন, আমি একটি নামজারি প্রস্তাবের জন্য নায়েব সাহেবকে ৫০০ টাকা দিয়েছিলাম। তিনি টাকা কম হয়েছে বলে জানায়। যেখানে সরকারি নিয়মে কোন টাকা নেওয়ার বিধান নাই।
এপ্রসঙ্গে ফুকুরহাটি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন বলেন, আমার অফিস সম্পন্ন ঘুষ মুক্ত। কোন ধরনের অনিয়ম আমার বিরুদ্ধে নেই। আপনি এলাকায় এসে খোজখবর নিয়ে দেখেন। আমি এই অফিসে ৪ বছর যাবত আছি। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
এবিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য রাজ্জাক হোসাইন রাজ বলেন, বর্তমান
সরকার ডিজিটাল সরকার। সরকার ভূমি সেবা হয়রানির প্রতিরোধে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমি সেবা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। আর কিছু অসাধু ব্যক্তিরা সেবার নামে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করছে। যারা সেবার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানায় তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি (অ.দা) শান্তা রহমান জানান, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।