আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী, ঠাকুরগাওঁ :কর্মস্থলে যেতে কিংবা বাড়ি ফিরতে কয়েক বছর ধরেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ভূল্লীতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী গনের।
ঠাকুর গাওঁ সদর উপজেলার ভূল্লী থানার ভূল্লী বাজার এবং একই অবস্থা মুন্সীর হাট ও বোর্ড অফিস বাজারের। হঠাৎ একটি বাস এলে তাতে হুড়মুড় করে ওঠার চেষ্টায় থাকেন যাত্রীরা। তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে প্রচণ্ড ভোগান্তির শিকার হন তাঁরা। আর বাস বা অন্য কোনো যানে উঠার অপেক্ষায় বসে থাকেন মানুষের দোকানের সামনে। এতেও কথা শুনতে হয় সেই দোকানের মালিক পক্ষের।
বালিয়া -দেবীপুর -বড়গাওঁ -আউলিয়াপুর ও শুখানপুখুরী এই ৫ টি ইউনিয়ন নিয়ে ভূল্লী থানা গঠিত হলেও প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী উঠানামা করে ভূল্লী বাস ষ্টেশনে।
ভূল্লী সাব- রেজিস্ট্রার অফিস, ভূল্লী থানা, ভূল্লী ডিগ্রি কলেজ, কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়,ভূল্লী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,খোশবাজার কামিল মাদরাসা, সোনালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক সহ অসংখ্য সরকারী বেসরকারি ব্যাংক – বিমা এবং সংস্থা রয়েছে ভূল্লী এলাকায়। এ সকল প্রতিষ্ঠান গুলো যখন ছুটি হয় তখন উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক অফিসার তারাও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে বাসের জন্য। যাত্রী ছাউনির অভাবে বসতে পারেনা কোথাও,
নির্ধারীত ষ্টেশন ম্যান না থাকায় আট-দশজন যাত্রীকে একসঙ্গে বাসে উঠতে হিমশিম খেতে হয় যাত্রীদের,অথচ ভূল্লীতে গাড়ি থামালেই বাসের কন্ডাক্টরের কাছ থেকে টাকা নেন ভূল্লী ষ্ট্যান্ড কমিটির লোক।
রবিবার ভূল্লীহাট,মূন্সীর হাট ও বোর্ড অফিস বাজারে বসার যায়গা বা যাত্রী ছাউনি না থাকার কারনে গাড়ির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের।
রবিবার সকালে গিয়ে দেখা যায় আঃ রহিম নামে এক ব্যাক্তি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দিনাজপুর যেতে ভূল্লীতে দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় থাকেন,আকাশ মেঘাছন্ন থাকায় অনেকটায় যেনো চিন্তায় ছিলেন-বৃষ্টি এলে কোথায় আশ্রয় নেবেন পরিবার নিয়ে।
মুন্সি হাট এলাকার দিদার তালুকদার বলেন, মুন্সীর হাট থেকে ঠাকুরগাওঁ যাওয়ার জন্য প্রায় আধাঘন্টা ধরে অপেক্ষা করে আছি কোনো পরিবহন পাইনি ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় গাছের ছায়ায়।এখানে একটি যাত্রী ছাউনি থাকলেও সেটি কয়লা ও ময়লা ফেলে নষ্ট করে দিয়েছে।
কচুবারী গ্রামের তাহমিনা আক্তার বলেন বোর্ড অফিস বাজারে যাত্রী ছাউনি নেই বলে অন্যের দোকানের সামনে বসে থাকতে হয় গাড়ির জন্য, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় গামী যাত্রীদের জন্য এখানে একটি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা খুবই প্রয়োজন।
ভূল্লী বাসস্ট্যান্ডের পার্শ্বের সুইটি মিষ্টি ভান্ডারের মালিক আলমগীর আলম বলেন প্রচন্ড রোদ কিংবা বৃষ্টিতে যাত্রী গন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেকে বিরক্ত হয়ে আমার দোকানে এসে বসে বিশ্রাম করার জন্য।
এ বিষয়ে ভূল্লী বাজারের সভাপতি এবং ৫ নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জুলফিকার আলি ভুট্টাে চৌধুরী বলেন ভূল্লী শুধু একটি বাজার নয় একটি “থানা”এখানে বিভিন্ন যায়গা হতে মানুষ যাতায়াত করে, বিশেষ করে সকাল বেলা ঠাকুর গাওঁ সরকারী বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু সহ অনেক ছাত্র / ছাত্রী বাসের জন্য দাড়ীয়ে অপেক্ষায় থাকে- অতি অল্প সময়ে একটি যাত্রী ছাউনি নির্মান করা হবে যদি যায়গা পাওয়া যায়,আমি ঠাকুর গাওঁ ১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব রমেশ চন্দ্র সেন এবং মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় এর নিকট বিনীত অনুরোধ করছি যেনো ভূল্লীতে একটা যাত্রী ছাউনির ব্যাবস্থা গ্রহন করেন।
ভূল্লী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জুলফিকার আলি বলেন, ভূল্লী একটি পরিচিত নাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভূল্লীতে “থানা” করে দিয়েছেন, এখন একটি যাত্রী ছাউনির প্রয়োজন আমরা সবাই সম্মিলিত ভাবে চেষ্টা করতেছি ভূল্লীতে যাত্রী ছাউনি নির্মান করার জন্য, ভূল্লীতে ভূল্লী থানা হয়েছে যাত্রী ছাউনিও হবে ইনশাআল্লাহ।
ঠাকুর গাওঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডঃ অরুণাংশু দত্ত টিটো বলেল ভূল্লীতে যাত্রী ছাউনি নেই এটা পূর্বেও আলোচনা হয়েছিলো আমি অনেকেরই সাথে কথা বলছি একটা যায়গা পেলে অচিরেই ভূল্লীতে যাত্রী ছাউনি নির্মান করা হবে।