ঢাকা৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পল্লী গ্রাম থেকে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে শরতের মন মতানো শুভ্র কাশবন

বার্তা বিভাগ
আগস্ট ২২, ২০২৩ ৮:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তাপস মজুমদার,(কালিগঞ্জ-সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের পালাবদলে আসে শরৎ। শরৎ আগমনের অন্যতম প্রতীক কাশফুল আর নীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ানো শুভ্র মেঘের ভেলা। রিমঝিম বর্ষার পরেই ভাদ্র-আশ্বিনজুড়ে শরৎ কালের রাজত্ব। শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের শুভ্রতা। প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এর আগমনী বার্তা।

তবে কালের বিবর্তনে গ্রামীণ দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শরতের কাশফুল। আগের মতো আর কাশ ফুলের দেখা মেলে না। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন, শরৎকাল এলেই কাশগুচ্ছ জেগে ওঠে গ্রামের নদী, ঝোপ, ঝাড়, রাস্তার আনাচে-কানাচে। তখন সাদা ধবধবে কাশফুলের মন মাতানো হিল্লোল দোল দিয়ে যায় সবার মনে।

প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টিকে দেখতে এবং এর সংস্পর্শ পেতে প্রায় সময়ই মানুষরা ভিড় জমাতো। ‘বর্ষার এই সময়টাতে কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো এলাকা। দেখতে ভালোই লাগতো। কাশফুল বাংলার চিরচেনা শরতের সুন্দর স্নিগ্ধ ফুল। গ্রামবাংলার অপরূপ শোভা কাশবন ছিল চেনা দৃশ্য। কিন্তু সেই কাশবন এখন আগের মতো চোখে পড়ে না।’ নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি জন্মাতে দেখা যায়।

এলাকার বয়স জ্যেষ্ঠরা বলেন আগে গ্রামীণ দৃশ্যপটে কাশবন দেখা যেত। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কাশ দিয়ে গ্রামের বধূরা ঝাঁটা, ঝুড়িসহ নানান প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করে। কৃষকের ঘরের ছাউনি হিসেবেও এর ব্যবহারের জুড়ি নেই।

তারা বলেন শরৎ শুভ্রতার ঋতু। ঋতু অনুসারে ভাদ্র-অশ্বিনজুড়ে শরৎকালের রাজত্ব। নিকট অতীতেও দেখা গেছে শরৎকাল এলেই গ্রামবাংলার ঝোপ-ঝারে, রাস্তা-ঘাট ও নদীর দুই পাড়সহ আনাচে-কানাচে কাশফুলের মন মাতানো নাচানাচি।

ইদানীং সেগুলো আর তেমন চোখে পড়ছে না। কাশবনের ফুলগুলো দোল খেতো একটার সঙ্গে আরেকটা। এ সময় মানুষের মনে ভিন্ন রকম আনন্দের ঝিলিক বয়ে যেতো।

কবি জীবনান্দ দাস শরৎকে দেখে কবিতায় বলেছেন, ”বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রুপ খুঁজিতে যাই না আর”। শরতের এই অপরূপ রুপ দেখে মুগ্ধ কবি অবলীলায় পৃথিবীকে আর দেখার প্রয়োজন নেই বলে সিদ্ধান্ত নেন।

শরৎ মানেই প্রকৃতি, শরৎ মানেই নদীর তীরে তীরে কাশফুলের সাদা হাসি। জানা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশের মাঠে-ঘাটে কাশফুল ফুটতে দেখা যায়। এমনকি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এদেশে কাশফুল ছিল।

বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল ও পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশ বনের ঝাড় বেরে ওঠে। কাশফুলের বৈজ্ঞানিক নাম: এটি উচ্চতায় সাধারনত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নদীর তীরে ফুলফোটা শ্বেতশুভ্র কাশবন দেখতে খুবই সুন্দর। এর আদিবাস রোমানিয়া। যা ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। চিরল পাতার দুই ধারে খুবই ধার। পালকের মতো নরম এর সাদা ফুল। কাশফুলের অন্য একটি প্রজাতির নাম কুশ। নদীর দুথধারে, আইলে শরৎকালের সেই চিরচেনা দৃশ্য আর দেখা যায় না। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন। এখন গ্রামবাংলায় বিচ্ছিন্নভাবে থাকা যে কয়টি কাশফুল চোখে পড়ে সেগুলোও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সেখানে এখন তৈরি হয়েছে মৌসুমী ফসলের ক্ষেত। শরৎ শুভ্রতা ও স্বচ্ছতার প্রতীক।

আর এই শুভ্রতা মানুষের মনকে করে পবিত্র। তাইতো ঋতু বা প্রকৃতির কাছে শুধু চাইলেই হবে না, নগরায়নের প্রভাব থেকে সবাইকে কাশবন রক্ষায় দায়িত্ব নিতে হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে হয়। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি। যোগাযোগ: হটলাইন: +8801602122404 ,  +8801746765793 (Whatsapp), ই-মেইল: [email protected]