আরফিনুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি-নীলফামারী:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টিপাতে ফের বাড়তে শুরু করেছে তিস্তায় নদীর পানি। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। আজ সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুরে পানিপ্রবাহ কিছুটা কমলেও বিকেলে আবারও বৃদ্ধি পায়। বেলা ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, আকাশের বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি আরো বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি বন্দি হয়ে পরেছে জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের পূর্ব ছাতুনামা গ্রামের আশ্রয় প্রকল্পের ৪৫ পরিবারসহ কেল্লা পাড়া, কালিগঞ্জ, ঝারসিংহেসর, খগারচর, কিসামত ছাতনাই, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, ছোটখাতা, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ীসহ ২৫টি চরের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিতে বন্দি হয়ে পরেছে। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে তলিয়ে যাওয়া চরগুলো হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ও গবাদি পশু-পাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন।
ডিমলা উপজেলার উত্তর খড়িবাড়ী গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া কারণে চলাচলের যে রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা পানি বন্দি হয়ে পরেছি। গরু ছাগল নিয়ে নিরাপদ স্থানে পারি দিতে হচ্ছে।
পাটগ্রামপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের উঠানে পানি উঠে এসেছে আর এলাকার কিছু রাস্তা ও বাড়ি পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, উজানের ঢলে গতকাল রাতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আজ সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি প্রবাহ ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়। যা বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে।
সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার পর দুপুরে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা ৩টায় ফের ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।