আরফিনুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৯জুন) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৭ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝারসিংহেসর, খগারচর, কিসামত ছাতনাই, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, ছোটখাতা, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, গোলমুন্ডা সহ প্রায় ২০টি চর পানিতে তলিয়ে গেছে। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে তলিয়ে যাওয়া চরগুলো প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ও গবাদি পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা।
ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের লাল মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ উজানি পানি আসতে থাকে ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবার পানি কমলেও গতরাত থেকে পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একই গ্রামের আইয়ুব আলী জানান, দীর্ঘ সাত মাস পরে হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের মতো নিম্নাঞ্চল গুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। গরু- ছাগল, হাঁস-মুরগী ও ছোট বাঁচ্চাদের নিয়ে বিপদে পরে গেছি।
খালিশ চাপানী ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের নুর আলম বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে কিছু যায়গায় ভাঙ্গানের দেখা দিয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তার পানি পানি বাড়তে শুরু করেছে। সকাল পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটারে পানিপ্রবাহ চলছে। পানি বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি বাড়লে তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। বন্যা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা প্রস্তুত আছে।