আমিনুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ:
শতভাগ নারী কর্মকর্তা -কর্মচারী ও হাতের কাজে পারদর্শী বুটিক শিল্পী দ্বারা পরিচালিত মানিকগঞ্জের ডিফারেন্ট বিউটি হ্যান্ডিক্রাফট” এর কর্ণধার লাবনী আক্তারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে ইউএনসিডিএফ। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য তাকে শর্তসাপেক্ষে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।
বিসিক মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, আর্থিক সহযোগিতার জন্য মানিকগঞ্জের ১৪ জন নারী উদ্যোক্তা আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল সরজমিন পরিদর্শন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে লাবনী আক্তার কে মনোনীত করা হয়। ইতোমধ্য তিনি অনুদানের অর্ধেক অর্থ হাতে পেয়েছেন। বাকি অর্থ নিয়ম অনুযায়ী
অচিরে পাবেন। বিসিক কর্তৃক নিবন্ধিত ডিফারেন্ট বিউটি হান্ডিক্রাফ কারখানা ও শো-রুম মুলজান এলাকায় অবস্থিত।
নারী জাগরণের অগ্রপথিক ও জয়তী নারী উদ্যোক্তা লাবনী বলেন, মাত্র ৭০০ টাকা পুজি এবং তিনজন নারী কর্মচারী নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করি। কুসুন ও জামার কভারে হাতের কাজ দিয়ে একটি প্রোডাক্টের ফেসবুকে পোস্ট করি। যা অসাধারণ সাড়া পাই। অনেকটা শখের বসে হলেও তাদের অনুপ্রেরণায় পরবর্তীতে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করি।
আউটলেট অনলাইনে ব্যাপক চাহিদার জন্য পরবর্তীতে দেশব্যাপী পণ্য সরবরাহ চালু করি। সকলে সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণায় আজ আমার এই প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন নারী কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন -জীবিকা নির্বাহ করছে। উৎসাহিত হয়ে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদ ও বিক্রয় শুরু করি। যার ফলস্বরূপ ২০২২ সালে মানিকগঞ্জে শ্রেষ্ঠ জয়িতা পুরস্কার লাভ করি। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন নারী কাজ করেন। নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও গ্রামীন অর্থনীতির ইতিবাচক উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ আশা রয়েছে।তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের এই স্বীকৃতি আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
লাবনীর পিতা মানিকগঞ্জ ডিসি অফিসের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: লাবু মিয়া বলেন, লাবনীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা জেলা শহরেট বান্দুটিয়া এলাকায়। সে ঐতিহ্যবাহী এস কে গার্লস হাই স্কুল থেকে এস এস সি ও সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এইচ এস সি ও অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স এ এম.বি.এ করেছ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয় উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, জাতীসংঘের শর্ত পূরণে সক্ষম হওয়ায় তাকে এই অনুদান প্রদান করেছেন। এটা এককালিন একটা পেমেন্ট যা ব্যবসা সম্প্রসারণ জন্য শর্তসাপেক্ষে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন,
ইউ এন ভিজিটর দল সরজমিনে ভিজিট করে সন্তুষ্টির পর তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।
শর্তাবলির মধ্যে ৫০% নারী কর্মী থাকতে হবে। সৌভাগ্যবশত লাবনীর কারখানায় শতভাগ নারী কর্মী দ্বারা পরিচালিত। এ ধরনের সহযোগিতা নারী উদ্যোক্তাদের আরো উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।