মো: রবিউল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট:
জীবজগতের প্রতিটি জীব তথা প্রাণীকেই খেয়েপরে জীবনধারণ করতে হয়। মানুষ জন্মের পর থেকেই বাচার তাগিদে তার প্রয়ােজনীয় দ্রব্য স্থিতি করতে শিখেছে। সভ্যতার অগ্রগতি হয়েছে আর দ্রব্যের প্রয়ােজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলােকে কয়েক ভাগে ভাগ করেছেন। আর এ চাহিদাগুলাে পূরণের জন্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যই হচ্ছে নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্য। যা না হলে মানুষের একদণ্ডও চলে না। তাহলে খুব সহজেই অনুমান করা যায়, কোনাে একটি দ্রব্যের মূল্য যদি ক্রেতার সাধ্যের বাইরে চলে যায় তাহলে তার জীবন অনেকাংশে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রেক্ষাপটের দিকে একটু সচেতন দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেই দেখা যায় নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যের কী রকম উর্ধ্বগতি। খাওয়াপরার জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি দ্রব্যসামগ্রীর দাম হু হু করে বেড়ে চলেছে।
খুব সহজেই এর কারণগুলােকে চিহ্নিত করা যায়। ব্যবসায়ী শ্রেণির মুনাফালােভী মনােভাবকেই এর জন্য দায়ী করা যায়। এছাড়া আরও ছােট ছােট কিছু কারণ রয়েছে, তবে সেগুলাে গৌণ। মজুদদাররা দ্রব্য গুদামজাত করে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেল কিনা সে দিকে তাদের খেয়াল খুব কমই। তাদের ধারণা যেহেতু দ্রব্যটি মানুষের প্রধান মৌলিক চাহিদা পূরণে সক্ষম সেহেতু যেকোনাে উপায়ে দ্রব্যটি তারা ক্রয় করতে বাধ্য। আর সরকারের অর্থ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে এর বিরুদ্ধে কোনাে জোড়ালাে পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারে না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আর একটি কারণ হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি। সরকারি চাকরি জীবীরা যে হারে বিভিন্ন ভাতা পেয়ে থাকেন দ্রব্যের মূল্য সে হারে না বেড়ে বরং জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে।
রাজধানী থেকে শুরু করে সমস্ত দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর প্রতিনিয়ত মূল্য বৃদ্ধি ঘটেই চলছে। এ যেন নিত্যনৈমিক্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সরকার বলেন, প্রশাসন বলেন, কারোই এদিকে খেয়াল নাই। সাধারণ জনগণ নির্দৃিষ্ট ব্যবসায়ির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজীয় প্রায় প্রতিটি জীনিস এক মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি ২০/৩০ টাকা বেড়েছে। কাচা বাজারে সবজি যোগান পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও দাম প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। করলা- ৬০/৬৫, ভটভটি- ৬০/৬৫, ঢেড়স- ৪০/৪৫, বেগুন- ৬০/৬৫, আলু- ৪০/৬০, পোটল- ৬০/৬৫, লাউ- ৫০/৫৫, মিষ্টি কুমড়া- ৩০/৩৫, দেশি পটল- ৪০/৪৫, ঝিংগা- ৭০/৭৫, কাচা কলা- ৪০/৪৫, সজনা-১৩০/১৩৫, আদা-১৪০/১৪৫, রসুন-১৪০/১৪৫, কাচা মরিচ-১২০/ ১২৫, সুকনা মরিচ-৪৪০/৪৪৫, পিঁয়াজ-৭০/৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
উৎপাদক পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি পন্য কৃষকরা যে দামে বিক্রি করে তার থেকে খুচরা ব্যবসায়িরা কয়েকগুন বেশি মুল্যে ভোক্তাসাধারন ক্রয় করছেন।
এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রিতার সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের চড়া দামে পাইকারদের কাছ থেকে ক্রয় করতে হচ্ছে। পাইকাররা পন্যর দাম বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি সময়ে জ্বালানিতেল মুল্যবৃদ্ধির জন্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ভাবে চাদা আদায়, যানজটের কারনে দ্রুত পচনশীল সবজি নষ্ট হওয়া ইত্যাদিকে দায়ি করছেন ব্যবসায়িরা।