ঢাকা১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বালাসি বাহাদুরাবাদ নৌরুটে লঞ্চ চলাচলে খুশী উত্তরাঞ্চলের মানুষ, অন্তরায় নাব্যতা সংকট

বার্তা বিভাগ
মে ১৪, ২০২৩ ৭:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আনোয়ার হোসেন,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার বালাসী থেকে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাটের নৌরুটে নৌকার পরিবর্তে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় লঞ্চে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পেরে খুশী উত্তরাঞ্চলের মানুষর । তবে নাব্যতা সংকটে ৬ টি লঞ্চের পরিবর্তে দুটি লঞ্চ ও দুটি নৌকা চলাচল করছে এই রুটে। নাব্যতা সংকটে ঘাট থেকে লঞ্চ ৩ কিলোমিটার দূরে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঢাকা সহ উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় চলাচলকারী যাত্রী সাধারনের । যাত্রীদের ভোগান্তি রোধে লঞ্চ চলাচলে বিআইডব্লিউটিএ কে নিয়মিত নদী ড্রেজিং এর দাবি যাত্রী ও লঞ্চ ইজারা মালিকদের ।

প্রকাশ, গাইবান্ধার বালাসী বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাটের নৌরুটে আগে মানুষ প্রতিদিন ৪টি সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় গাইবান্ধা থেকে বাহাদুরাবাদ ঘাটে চলাচল করত। এতে করে গরমে ঝড় বৃষ্টির দিনে কাঠফাটা রোদ ও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে নৌকায় পার হতে হতো। পরে ২০২২ সালের ৯এপ্রিল ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বর্তমানে লঞ্চ সার্ভিস চালুর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পেরে সবাই খুশী । তবে বিআইডব্লিউটিএর উদাসীনতায় সঠিকভাবে নদী ড্রেজিং না হওয়ায় গরমে নাব্যতা সংকট এর কারনে মুল ঘাট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে লঞ্চ ঘাট চলে যাওয়ায় বালু চরে পায়ে হেটে ও ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। এতে করে যাত্রীদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় গুনতে হচ্ছে। সেই সাথে ৬টি লঞ্চের মধ্যে নাব্যতা সংকটে ৪টি লঞ্চ বালুচরে আটকা পড়ায় দুটি লঞ্চ ও দুটি নৌকা চলাচল করছে। এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে চাহিদামত কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পাওয়ায় লোকসানে রয়েছে লঞ্চ ইজারা মালিকগন। নাব্যতা সংকট কাটিয়ে সম্পূর্ণভাবে লঞ্চ চলাচল শুরু করলে লাভের অংশ থাকবে বলে মতামত লঞ্চ ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ’র।

বিদেশে অবস্থানরত গাইবান্ধার বাসিন্দা লঞ্চ যাত্রী নিশি জানান, তিনি দেশের বাহিরে থাকেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি বলেন, লঞ্চ চলাচলে সুবিধা হয়েছে। গরমের সময় নৌকা যাতায়াত করা সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কষ্টকর। নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণ। ছাউনি নেই। লঞ্চ সাধারণ জনগণের জন্য খুবই উপকারী। সুষ্ঠুভাবে যাতায়াত করতে পারা যায়। এ জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন।

‘ গাইবান্ধার পলাশপাড়ার বাসিন্দা ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির চাকুরীজিবী আমির আলী জানান, তিনি লঞ্চে শেরপুর যাচ্ছেন। নৌকার থেকে লঞ্চ চলাচলে সেবা ভালো। লঞ্চে লাইফবয় জ্যাকেট রয়েছে। নিরাপদে যেতে পারি। লঞ্চে বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। লঞ্চঘাট দূরে হওয়ায় একটু অসুবিধা। নদী ড্রেজিং করে লঞ্চটি ঘাটের কাছে নিয়ে গেলে ভাল হতো।

গাইবান্ধা বালাসীঘাটে লঞ্চ ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্বে থাকা শামসুল আলম সরকার পাপুল জানান, গাইবান্ধা হতে জামালপুর এর বাহাদুরাবাদ রুটে বর্তমানে ৬ টি লঞ্চের মধ্যে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট ও বিকেল ৪টায় দুটি লঞ্চ চলাচল করছে। দুটি লঞ্চ চললেও চাহিদামত যাত্রী পাচ্ছেনা। পানি স্বল্পতার কারনে ঘাট ৩ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় রাস্তা না থাকায় যাত্রীদের আসতে কষ্ট হয়। কষ্ট করে মানুষ আসতে চায় না। নাব্যতা সংকট এর কারনে আমরা ও লঞ্চ মালিকগণ খুবই ক্ষতিগ্রস্থ। লঞ্চ ষ্টাফ ও আমাদেরকে বসিয়ে রেখে স্যালারি দিচ্ছে। টাকা দিয়ে ঘাট কেনা। লাভ মোটেও হচ্ছেনা। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। এ জন্য তারা বিআইডব্লিউটিএ কে সুষ্টভাবে নদী ড্রেজিং এর দাবি জানিয়েছেন। তাহলেই প্রধান ঘাট থেকে লঞ্চ পরিচালনা করতে পারবে। নদীতে পানি আসলে পূর্ণাঙ্গভাবে লঞ্চ চলাচল করলে ব্যবসায় আশার আলো দেখবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, নাব্যতা সংকটে ২০০০ সালে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ২২ বছর পর আবারও রুটটিতে পরীক্ষামূলকভাবে লঞ্চ চালুর মাধ্যমে যাত্রী পারাপার শুরু হয়।
১৯৩৮ সালে তিস্তামুখ ঘাট-বাহাদুরাবাদ নৌরুট চালু করে ব্রিটিশ সরকার। তখন থেকে এই রুটে ঢাকা থেকে দিনাজপুর রেল যোগাযোগ চালু ছিল। ১৯৯০ সালে নাব্যতা সংকটে তিস্তামুখ ঘাট ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু নাব্যতা সংকটে ২০০০ সালে রেলের যাত্রীবাহী ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই রুটে জামালপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকায় যাতায়াত করতো।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করা হয়। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি। যোগাযোগ: হটলাইন: +8801602122404 ,  +8801746765793 (Whatsapp), ই-মেইল: thesocialtimes24@gmail.com