আনোয়ার হোসেন,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পড়ে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহের পরিচয় খুঁজে বের করে দাফন কাজে মানবিক পদক্ষেপে প্রশংসিত হলেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২ মে) সকালে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ টু নাকাই সড়কের সাজ্জাতের ইট ভাটার সামনে অজ্ঞাত অটোরিক্সার ধাক্কায় আহত হয় ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে মৃত্যু হলে তার মরদেহ হাসপাতালের বারান্দায় বেওয়ারিশ হিসেবে পড়ে থাকে।
এদিন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন হাসপাতালে গেলে বিষয়টি তার দৃষ্টিগোচর হয়। এ সময় তিনি বিভিন্ন থানায় ওই মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করার তাগিদ দেন। ঘটনার দিবাগত রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ওই অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করেন। ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম চেংটু (৭২)। সে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রামপুরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আকাম উদ্দিন শেখের পুত্র। পুলিশ সুপার কামাল হোসেন পরিচয় নিশ্চিতের পর মরদেহ দাফন-কাফনের জন্য নগদ অর্থ ও পরিবহনের ব্যবস্থা করেন। বুধবার (৩ মে) সকাল ১১টায় সিরাজুল ইসলাম চেংটুর মরদেহ নিজ বাড়িতে নামাজে জানাযা শেষে দাফন করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী ও ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম বিপ্লব জানান, সিরাজুল ইসলাম চেংটু (৭২) একজন অসহায় ব্যক্তি। তিনি মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় জীবন-যাপন করতেন। তার ১ পুত্র ২ মেয়ে সকলেই বিবাহিত। নিজ নিজ কর্মস্থলে বসবাস করায় গ্রামে একায় থাকতেন। তার এ মরদেহের সৎকারে ব্যবস্থা করায় পুলিশ সুপাররের প্রতি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি জানাজায় উপস্থিত মুসল্লিরা পুলিশ সুপারের ভুঁয়সী প্রশংসা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইজার উদ্দিন জানান, রাত ৩টার দিকে গাইবান্ধা থেকে মরদেহ রামপুরা পশ্চিমপাড়া গ্রামে আনা হয়। পরে বুধবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় উপস্থিত হয়ে তিনি এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মানবিক পুলিশ সুপারের সহযোগিতার বিষয়টি স্থানীয়দের বিস্তারিত জানান। এসময় তিনি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর বিষয়টিতে প্রয়োজনে মামলা গ্রহণ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
এ রিপোর্ট লেখা অবধি জানা গেছে, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম চেংটুর পুত্র বাদল মিয়া গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা রুজুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।