মো: রবিউল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সংকরটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্য গোপন করে সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছেন (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক।
ভুক্তভোগী (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়ের সংকরটারী এলাকার মানিক মাস্টারের ছেলে।
জানা যায়, লালমনিরহাট জেলায় গত ২০২২ ইং সালে নিন্মমাধ্যমিক (প্রাইমারিতে) সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর যথারীতি নিয়ম অনুসারে বিভিন্ন উপজেলায় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রদান করেছেন নিয়োগ কমিটির সদস্য ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ।
সেই প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি পোষ্য কোটায় দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সংকরটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষর মানিক মাষ্টারের ছোট ছেলে (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম পোষ্য কোটায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির নিয়ম অনুসারে দেখা যায় পোষ্য কোটায় আবেদনকারীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক মাস্টারের ছোট ছেলে (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম চাকরির আবেদন করার ৫ বছর পূর্বে বিয়ে করেছেন পাশের এলাকার হাজীগঞ্জ বাজারের পাশে অবসর প্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ইয়াকুব মোল্লার মেয়ে পাখি বেগমকে।
ঘর সংসার করছেন ৫ বছর যাবত সদ্য পোষ্য কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত মানিক মাষ্টারের ছেলে (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম। দীর্ঘদিন সংসার করায় তার পরিবারে একটি মেয়ে বাচ্চা জন্ম নেয়। মেয়েটির নাম “ছোয়া মণি”। বর্তমানে মেয়েটির বয়স প্রায় ৫ বছর। তিনি তার বিবাহের তথ্য সম্পূর্ণ রুপে গোপন করে বিভিন্ন জায়গায় আর্থিক সুবিধা দিয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছেন সংকরটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন তারই বাবা মানিক মাষ্টার।
সংকরটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক মাস্টার তথ্য গোপন করা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছোট ছেলে (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম ৫ বছর পূর্বে বিবাহ করেছে এটা সঠিক। তার ঘরে ছোট একটি মেয়ে “ছোয়া মণি” আছে স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, অনেক কষ্টে বিভিন্ন জায়গায় আর্থিক সুবিধা দিয়ে চাকরির ব্যবস্হা করেছি। বিষটি নিয়ে লেখালেখি না করার জন্য আহব্বান জানান।
ভুক্তভোগী (ডাকনাম) সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, চাকরি যেহেতু হয়েছে, এই ব্যাপারে আর কিছুই বলতে চাইনা। আপনারা যা করতে চান করেন।
সংকরটারী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক’জন এলাকাবাসী বলেন, সাইফুল ইসলাম চাকরিতে যোগদান করার ক’য়েক বছর পূর্বে হাজীগঞ্জ বাজারের পাশে ইয়াকুব মোল্লার মেয়ে পাখি বেগমকে বিবাহ করেছেন। আমরা তার বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। বিষটি এলাকার সবাই জানে।
আদিতমারী শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, নিন্মমাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আমরা গুরুত্ব দেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ন পত্রের উপর। পোষ্য কোটায় আবেদন করলে প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। তথ্য গোপন করে চাকরিতে যোগদান করলে ও তার প্রমাণ পাওয়া গেলে, চাকরি করার সুযোগ আর থাকবে না।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় এ বিষয়ে বলেন, তথ্য গোপন করে চাকরিতে যোগদান করলে এবং তা প্রমানিত হলে, চাকরি চলে যাবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ অনুসারে তথ্য গোপন করার কারণে শাস্তির ব্যবস্হা করা হবে।