মো: রবিউল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি,লালমনিরহাট:
লালমনির হাট পৌরসভায় কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই নিধন হচ্ছে কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সবুজ সুশোভিত পুরনো শত স্মৃতি বিজড়িত বৃক্ষরাজি। বৃক্ষের শেকড়ের সাথে উঠে আসছে লাশের হাড় ও দেহের অংশ বিশেষ। আজ দুপুরবেলায় কেন্দ্রীয় কবর স্থানে গিয়ে দেখা যায় সেই স্মৃতি বিজড়িত গাছ গুলো কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় মুসল্লীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, লালমনিরহাট পৌর সভার তত্ত্বাবধানে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়া এ সব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
আজ যেনো কবর স্থানে ছিল আরেক অন্য রকম আজাহারি। কবর যেন একজন মানুষের শেষ ঠিকানা। মানুষ মরে গিয়ে কবরস্থানে শান্তিতে ঘুমাতে চায় এটা অনেকের ধারনা। কিন্তু সেই কবর স্থানে দেখা গেল কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই গাছ কাটার হিড়িক। স্থানীয় মুসল্লী বৃন্দ পৌরসভার এমন কর্মকান্ডে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে এবং এটা ধর্মীয় অনুভূতির আঘাত হেনেছে বলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের দাবি, আমাদের চিরতরে ছেড়ে যাওয়া প্রিয় মানুষ গুলোর কবরস্থানে আসি একটা নজর দেখার জন্য, দোয়া করার জন্য। নিরাপত্তার কারনে অনেকে কবর পাকা করেছেন, কেউ বা বাশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে, কবরে ছায়া দেওয়া ঐতিহ্যবাহী শোভাবর্ধক কারি গাছে কেটে ফেলায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, লালমনিরহাট পৌর সভার এমন কর্মকান্ডে আমরা মানসিক ভাবে আহত হয়েছি। লালমনিরহাট পৌর সভার এমন অমানবিক কর্মকান্ডে শহর জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়।
এই হাটখোলা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে শায়িত আছে কত পীর , বুজুর্গ , ওলামায়ে কেরাম , মুক্তিযোদ্ধা সহ জাতির সকল কিংবদন্তি সন্তান। তাদের কবরের উপর সুশোভিত বৃক্ষরাজিরাও হয়তো আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকতো। সেই জিকিরের ফলে কবরের ভেতরে থাকা মরদেহের কবরের আজাব হয়তো অনেকটাই লাঘব হত। কিন্ত মৃতদেহের বলার কোনো অধিকার নেই , অধিকার থাকলে হয়তো তারা বলতে পারতো এই পবিত্র রমজান মাসে এমনটা করাটা ঠিক হচ্ছেনা।যেখানে জীবিত মানুষের থেকে তাদের আধিকার খর্ব করা হয় প্রতিনিয়ত সেখানে মৃত লাশের অধিকার আদায়ের কথা বলা অরণ্যে রোদন ছাড়া আর কি বা হতে পারে ।
স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি এইসবের কিছুই জানেন না, তাকে এই গাছ কাটার মহা উৎসব থেকে রাখা হয়েছে আড়ালে। কোনো প্রকার নিলাম ছাড়াই পাঁচটি মেহগনি গাছ আশি হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে সাকোয়া বাবু হোসেনের করাত কলে আর বাকিগুলো রংপুরে। অনেকের অভিযোগ, লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানের শোভাবর্ধক কারী ঐতিহ্যেবাহী গাছ গুলো যেনো আর পুনরায় না কাটা হয়, এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় দাবি জানানো হয়।