বাংলাদেশের চলালমান রাজনীতি সনাতন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পথ ধরেই চলছে। যদিও আমরা পদ্মা সেতু পেয়েছি, মেট্রোরেল পেয়েছি এবং অন্যান্য স্বপ্নময় উন্নয়নের ছোয়া পেয়েছি তবে রাজনীতি এখনো সনাতন ধারায়। সনাতন রাজনৈতিক সংস্কৃতির কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন- একজন এম.পি’র ছেলে এম.পি হবে, সভাপতির ছেলে সভাপতি হবে, চেয়ারম্যান বার বার চেয়ারম্যান হবে ইত্যাদি। অর্থাৎ নতুনরা রাজনীতে আসা ও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করা এগুলো খুবই কদাচিৎ। চলমান এ সংস্কৃতিতে তা মহা অন্যায় বলাও চলে।
উত্তরাধীকার সূত্রে প্রাপ্ত এ সংস্কৃতি অতীতের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বর্তমান অবধি চলমান।
এ সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা অথবা ঘৃণা করে অনেকেই যোগ্য হওয়া সত্বেও নির্বাচনে আসেন না। যার ফলে সমাজের সংখ্যা লগিষ্ঠ কিছু সংখ্যক ব্যক্তির জন্য এম.পি ও মন্ত্রীত্বসহ অন্যান্য রাজনৈতিক পদমার্যদা গুলো নির্ধারিত থাকে।
যদি উন্নত দেশের রাজনীতি পর্যালোচনা করি সেখানে দেখা যায়, নিজ দেশর সকল শ্রেণির মানুষ ও বিদেশী নাগরিকরা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তারা এম.পি হচ্ছেন , মন্ত্রী হচ্ছেন এমনকি প্রধানমন্ত্রীও হচ্ছেন। অর্থাৎ এখানে রাজনীতে অবাধ প্রবেশাধিকার।
আমরা বগুড়ার নির্বাচনে যা দেখেছি, একজন সাধারণ মানুষ হয়েও হিরো আলম এই সনাতন প্রথার বিরোদ্ধে লড়াই করেছন। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহণ করেছেন। প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন। নির্বাচনে ব্যাপক সমর্থন ও ভোট পেয়েছেন। যদিও তিনি এক সময়ে আমাদের হসি ঠাট্টার পাত্র ছিলেন। নানা জরিপ পর্যালোচনা করে দেখা যায় সেই হাসি ঠাট্ট আজ চিরন্তন বাণীতে রূপ নিচ্ছে। দেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম গুলোতে তাকে নিয়ে সংবাদ ছাপানো হচ্ছে।
যোগ্যতা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠে, তবে সে প্রশ্নের জবাব হিরো আমল থেকে আমরা যেমন টা পেয়েছি , তার চেয়ে অনেক স্পষ্ট জবাব পাওয়া যায় ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যমে সংরক্ষিত এম.পি দের নানা ভাষণ থেকে। অর্থাৎ হিরো আলমের মতো অনেকেই বিগত বছরগুলোতে এম.পি হিসেবে সংসদে ভাষণ দিয়েছেন।
হিরো আলম একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। অথচ এই কাজটি সাহসের সাথে করা উচিত ছিল যারা অত্র সমাজের সুশিল ও শিক্ষিত ছিলন অথবা যারা এই পদমর্যাদার জন্য যোগ্য ছিলেন তাদের। খুব দুখের বিষয় হল তারা কেউ এগিয়ে আসেন নি। অর্থাৎ উক্ত সুশিলরা এই সনাতন রাজনৈতিক প্রথাকে সমর্থন করেছেন বা মেনে নিয়েছেন। সে বিবেচনায় আমরা বলতে পারি, সনাতন রীতিনীতি ও প্রথার পরিবর্তনের জন্য তিনি যে সংগ্রাম করেছেন, নি:সন্দেহে এটা এক মহা বিপ্লব। এ বিপ্লবে হিরো আলম যে সংগ্রাম করেছেন, সাহসের সাথে যেভাবে লড়েছেন: সে বিবেচনায় এটুকু বলা যায় যে , তিনি একজন বিপ্লবী সৈনিক।-ইমরুল কায়েস